Wednesday, 18 January 2017

চিলেকোঠা

তুমি যখন অবহেলায়
শরীর খুঁজে শরীর মেলাও;
তখন তুমি আমায় খোঁজো ওই চিলেকোঠার ঘরে;
শ্যাওলা ভরা ছাদ পেরোনো,
টলটলে ওই সিঁড়ি পেরোনো চিলেকোঠার ঘরে;
গুমোট হওয়া বন্ধ ঘরে,
সাজিয়ে রাখা স্বপ্নের ভারে
নিঃশ্বাস নিতে চাওয়া ওই চিলেকোঠার ঘরে;
অন্ধকারে, বন্ধ ঘরে, একলা করে
তুমি আমায় খোঁজো নিজের মতো করে।

তখন আমি উদাস হয়ে
খানিকটা ঠিক বাধ্য হয়ে,মাথা নুয়ে;
ছুটি তোমার পিছে পিছে, সেই চিলেকোঠার ঘরে;
নিয়তি আমি জেনেই গেছি,
পরিস্থিতি ও জানা,
তবুও কিছু পাওয়ার নেশা আজও দেয় হানা;
সকল কিছু ভুলে আমি সবার চোখ পালিয়ে
আমি হাঁপাতে থাকি ওই দেয়াল খানা ধরে;
চিলেকোঠার ওই বন্ধ ঘরে, একলা করে অন্ধকারে
খুঁজছো তুমি আমায় আজ ও নিজের মতো করে।

যখন তুমি শরীর মেলাও,
ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাও
কেমন করে বোকার আমি সত্যি মেনে চলি;
আলগা করে খোঁপার বাঁধন, লুটিয়ে শাড়ির আঁচল
মেলে ধরি আবার নিজেকে সেই পুরনো নিয়ম মতো;
ভুলে যাই সেই মিথ্যে গুলো,
স্বপ্ন যা সব এলোমেলো;
নতুন আশায় আবার তোমার কাছে আসি;
নিঃশ্বাস আজ হিসাব কষে বন্ধ ঘরের গরাদ ধরে
খোঁজটা তুমি চালিয়েই যাও নিজের মতো করে।

কষ্ট যখন মাথায় চড়ে,
প্রতি আঘাতের বশে,
চিৎকার আজ গামছা চাপা,চোখের জলই ভাসে;
লোনা জল আজ ধুয়ে দিতে চায় ওই আকাশ ভরা স্বপ্ন;
আমি তখন স্বর্গ খুঁজি ওই আঘাত গুলোর কাছে,
তুমি যখন নেশার মতো শরীর নিয়ে খেলো
আমার কাছে তোমার খুশিই সবার থেকে ভালো,
ভুলে যাই আজ কষ্ট গুলো
উত্তেজনার বশে;
আকাশটা আজ জমা হয়েছে ওই চিলেকোঠার মাঝে;
আঁকড়ে রেখে চোখের জলে ভেজাই যোনির দোর
কষ্ট যাতে দমায় না আজ তোমার মোহের ঘোর।

ঘন্টা খানেক ঘাম ঝরানো,
কাজের ইতির পরেই
তুমি তখন সাহেব বাবু, সভ্য হয়ে ফিরে;
যাওয়ার আগে হাতটা যখন ধরতে আমি চাই
চিনিয়ে নিয়ে বিরক্তি আজ আমায় দিয়ে যাও,
“দিয়ে যাওয়া কথা গুলো তবে আবার মিথ্যে হবে?”
“বেশ্যা তোর কথা কিরে, টাকাই ভোলায় তোরে।“
মুখের উপর জমানো আজ হিসাবের টাকা
হৃদয়খানা তবুও চায় সেই ভুলতে চাওয়া আশা।
চোখের জলে মুখের মেকাপ গড়ায় গাল ভরে,
আবার আমায় যেতে হবে স্বপ্নকেনার তরে।
কুঁচিয়ে শাড়ি, নামিয়ে ব্লাউস
সিঁড়ির পেছল ফেলে
নেমে আসি আজ ফেলে আসা সত্যি কথার কাছে;
পাল্লা খোলা জানলা বেয়ে স্বপ্ন গুলো কাঁদে
চিলেকোঠা আবার হারিয়ে যায় সেই মিথ্যে আশার ফাঁদে।।   

Saturday, 14 January 2017

মিসিং ডায়েরি

যখন তুমি চুরি গিয়েছো মাঝরাতের আঁধারে;
সারা শহর ঘুমায় চুপিসাড়ে,
স্বপ্ন গুলো উবে গিয়ে তখন জমছে সবে
ওই ভেপার ল্যাম্পের আড়ালে;
আমি চেঁচিয়ে ছিলাম,আধো ঘুম ভাঙ্গা উৎকণ্ঠায়
যেন শিকল ছেঁড়ার যাতনায়;
কেউ আসেনি তখন, শুধু পাশ ঘুরেছিলো।

ওরা তোমায় নিয়ে গেলো টেনে, হিড়হিড়িয়ে
কাপড় জামা এদিক ওদিক,কোথাও গেছে ছিঁড়ে,
শীতের রাতের শিশির গুলো তখন
আসর জমিয়েছে তোমার গায়ের কাছে;
আমি চিৎকার করে ডেকেছিলাম স্বপ্নচুরির উৎকণ্ঠায়
পাথরচাপা কান্নাতে ভিজে;
কেউ ছিলো না পাশে, শুধু চাদর টেনেছিলো।

তুমি তখন অনেক খানি দূরে, অন্ধকারের শেষে;
কুয়াশা তখন রাহুর মতো গিলছে তোমার মুখখানা,
চোখের জলের এলোমেলো চলাচলে
তোমার মুখখানা হয়ে গেছে আবছা;
আমি হাত বাড়িয়েছিলাম, তোমায় হারানোর ভয়ে
হিসাব ছাড়া অনুভূতির বশে;
কেউ শোনেনি তখন, শুধু কটা আলো জ্বলেছিলো

তখন তুমি চুরি গিয়েছো ওই জল্লাদগুলোর কাছে;
থম্থমে হয়ে চিৎকার গুলো ঠাণ্ডা হাওয়ায় ভাসে;
লুটিয়ে আমি তোমার পথের পরে
লিখে চলেছি আমার শেষ চিঠি তোমার তরে,
আমি তখন হাত বাড়াইনি আর তোমায় আগলাবার চেষ্টায়
ভেঙ্গে পড়া স্বপ্ন গুলো কুড়িয়েছিলাম সন্তর্পনে;
কেউ ছিলো না তখন, ভোর হতেও বেশ খানিক বাকি

একফালি চাঁদটাও আড়ি পেতে শুনেছিলো সেই পাঁজরভাঙ্গা চিৎকার

সাড়া দেয়নি তাতে,শুধু লম্বা হাই তুলেছিলো

Sunday, 8 January 2017

দুরত্ব

আমি একলা হেঁটেছি পথে পথে
অমনোযোগের কিছু রেখা ছিল চোখে;
ফুটপাথ গুনে মাইল ফলক
আমি তো বুঝিনি কখন রাস্তা গিয়েছে বেঁকে

মেয়েটি বলেনি এতোকিছু
চিরকুট ছিলো মিতভাষী;
আগামীর বার্তা ছিলো তাতে,
ছিলো না সে পরিচিত হাসি

ভালোবাসা কমেছে ক্রমশ
রাত জাগা তারই জিজ্ঞাসায়
আমি হারিয়েছি অবাধ খেয়ালে
ভালোবাসা হারিয়েছে আমায়

একলাটি আমার যাওয়া আসা
বন্দর হয়ে আজ ফিকে,
গতিহীন কিছু চাওয়া পাওয়া
আমি নিঃস্ব আজ ভালোবেসে

সময় বাড়িয়েছে কিছু প্রহর
এলোমেলো খেয়াল অষ্টাদশী,
বালিকা আর বলেনাভালো থেকো

আমিও বলি না ভালোবাসি।।

নশ্বর

আমি জানি নশ্বর আমি; একটা একটা দিন ফুরায় আর আমি গুনি; এই বুঝি বাজল সাইরেন; শরীরের কারখানায় যখন ধীরে ধীরে কর্মবিরতি আসতে থাকে হঠাৎ করেই একদিন ...