Tuesday, 28 April 2020

ভাঙণের সুর



বিনি,তুমি শুনেছ ওই ভাঙণের আওয়াজ?
নদীর ঢেউ গুলো যখন এসে আছড়ে পড়ে দুপাড়ে,
খুব একটা আওয়াজ হয় না,কিন্তু ভাঙতে থাকে;
ওরা দিনে ভাঙে, রাতে ভাঙে,
কেউ হিসাব রাখে না; আমিও রাখিনি;
শুধু একবার বলেছিলাম, 'ওপাড়ার জগাইখুড়ো
এবারে আর রক্ষে পেলে না, পাড় যে বড় ভাঙছে!'
তখন বুঝিনি, কিন্তু এখন শুনতে পাই;
ও ভাঙণের আওয়াজ আমার কানে বড় বাজে।
বিনি, তুমি কি সত্যিই কিছু শোননি?

 

বিনি, মনে আছে গেল বছরে কালবোশেখীর পরে
রতনদের ঘরখানার ওই দাঁত বেরনো চেহারা?
চোখের সামনে ভাঙতে দেখেছি,
বছরের পর বছর আগলে রাখা দেওয়ালগুলো
চোখের নিমেষে কিভাবে মিলিয়ে গেল মাটিতে;
সবাই দেখেছিল, আমিও দেখেছি,
শুধু একবার বলেছিলাম, 'মাথা থেকে ছাউনিটাও গেল!
শুধু কপাল করে মাথাটাই বেঁচে গেছে।'
সেদিন বুঝিনি, কিন্তু আজকে বুঝতে পারি
ওই দেওয়াল ভাঙার কান্না আমার কানে বড় বাজে।
বিনি তোমার কি পড়েই না আর মনে?

 

তুমি কী সেই থমকে যাওয়া বুঝতে পারো?
আমার এই ভীষণ থমকে যাওয়া ভাবায় তোমায় আদৌ?
হয়তো ভাবায় তোমায়, হয়তো বাকিরা বোঝে…
তাই কৌতূহলের বশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়;  
সেই কৌতূহলীদের ভিড়ে আমি তোমায় খুঁজে পাই না আর....
সেই পরিচিত স্বর আর কানে আসে না,
সেই মুখের উদ্বিগ্নের কারণ আর কোনও দিনও হতে পারবো কী!! 
জানো! তোমায় ছোঁয়ার প্রবল ইচ্ছে বুকে নিয়ে
কতবার হেঁটে গেছি অলীক স্বপ্নের দিগন্ত রেখা পর্যন্ত....
পাইনি তোমায়। ভেঙেছি আরও!! একটু একটু করে ভাঙি অহর্নিশি;
কখনও পাড়, কখনও দেওয়াল, আবার কখনও হৃদয়।


বিনি, তুমি এই ভাঙনের শব্দ তুমি শুনতে পাও না!
তুমি সত্যিই...শুনতে পাও না!!


1 comment:

নশ্বর

আমি জানি নশ্বর আমি; একটা একটা দিন ফুরায় আর আমি গুনি; এই বুঝি বাজল সাইরেন; শরীরের কারখানায় যখন ধীরে ধীরে কর্মবিরতি আসতে থাকে হঠাৎ করেই একদিন ...