Saturday, 13 June 2020

গুলাবো-সিতাবো



#নো_স্পয়লার

ডিরেক্টরঃ- সুজিত সরকার
মুখ্য চরিত্রঃ- অমিতাভ বচ্চন, আয়ুষ্মান খুরানা
সময়ঃ- ২ ঘন্টা 


ট্রেন থেকে নেমেই প্রথমে তুন্ডে কাবাবিতে গিয়ে মোটা মোটা দুটো পরোটা আর সাথে এক প্লেট গালাওটি কাবাব না খেলে আমার মন ভরে না। লক্ষ্ণৌ এসে গালাওটি কাবাব খাবো না এটা আবার সম্ভব নাকি! এক নিমেষে এসব খাওয়ার পরে একটা কাঁচের কাপে করে কড়া দুধ চা আর সাথে ময়দার বিস্কুট, এখান থেকেই শুরু। শেষ হবে ছাপান্ন ভোগের রকমারি মিষ্টি দিয়ে। লক্ষনৌ আর খাওয়া দাওয়া কোনভাবেই যেন আলাদা করা যায় না। সাথে মানুষের আতিথেওতা। গুটখা চেবানো লাল লাল দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে গালিব, ফৈয়জদের অবাধ যাতায়াত। এমনিতেই উর্দু মিষ্টি ভাষা সাথে আবার সেই খান্দানি আতিথেয়তা এলে এক কাঠি বেড়ে যায় কিনা। হালে টোটোর দৌরাত্ম্য কিছুটা বাড়লেও চৌওকে দাঁড়িয়ে থাকা টাঙ্গা গুলো জানিয়ে যায় নবাবিটা একটু ফিকে হয়ে গেলেও হারিয়ে যায়নি একেবারেই। 

Tuesday, 28 April 2020

ভাঙণের সুর



বিনি,তুমি শুনেছ ওই ভাঙণের আওয়াজ?
নদীর ঢেউ গুলো যখন এসে আছড়ে পড়ে দুপাড়ে,
খুব একটা আওয়াজ হয় না,কিন্তু ভাঙতে থাকে;
ওরা দিনে ভাঙে, রাতে ভাঙে,
কেউ হিসাব রাখে না; আমিও রাখিনি;
শুধু একবার বলেছিলাম, 'ওপাড়ার জগাইখুড়ো
এবারে আর রক্ষে পেলে না, পাড় যে বড় ভাঙছে!'
তখন বুঝিনি, কিন্তু এখন শুনতে পাই;
ও ভাঙণের আওয়াজ আমার কানে বড় বাজে।
বিনি, তুমি কি সত্যিই কিছু শোননি?

Thursday, 2 April 2020

হারানো বিকেল আর ঈশিতা





            ছোটবেলায় মা কে বলতাম বড় হয়ে ক্রিকেটার হব। গড়পড়তা বাকি ছেলেদের মতো শচীনের স্ট্রেট ড্রাইভ বা সৌরভের স্টেপ আউট করে ছয় দেখে মুগ্ধ হয়ে না, বাইরে বাইরে খেলতে যায় এই কথা ভেবেই। সেই কোন ছোট থেকে বাইরে যাওয়ার সখ, কিন্তু দিনের শেষে অফিস থেকে ফেরার সময় উপলব্ধি হত যে এই স্বপ্ন বুঝি আর সত্যি হল না। মধ্যবিত্ত বাড়িতে বড় হওয়ার সময়েই বুঝে গেছিলাম ক্রিকেট আমার জন্যে শুধু টিভিতেই শোভা পায়, তাই সেই দিকে পা বাড়াই নি আর, কিন্তু বিদেশের লোভটা আর ছাড়তে পারিনি। হ্যাঁ, আমি এটাকে লোভ বলেই মানি, কারণ বিদেশে সব ভালো এই ধারণা আমাদের বদ্ধমূল আর সেটা থেকেই বেটার জিনিসের প্রতি ভালোবাসা বা লোভ জন্মানো। চাকরিতে ঢুকে বছর এক দুই থাকার পরেই বুঝে গেছি বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ার বিশেষ সুযোগ নেই। সেই দেখে আমি নিজে থেকেই শুরু করলাম। আমি সবসময় আগে অফিস এসে, আগে বেরিয়ে যাই অফিস থেকে, যাতে মৃতপ্রায় অবস্থায় বাড়ি আসার পরেও নিজের জন্যে কিছুটা সময় থাকে। কিন্তু নতুন এই কাজের জন্যে সেই সময়টুকু নিজের জন্যেই রেখে দেওয়া যায় না, সেখান থেকে আর অন্যকে কি দেব। ঈশিতা ব্যাপারটা আন্দাজ করেছিল। নিয়মবিরূদ্ধ ভাবেই সেদিন আমায় দুপুরে ফোন করেছে, তখন আমার লাঞ্চটাইম।


Wednesday, 1 April 2020

অমর একাদশ






২৯শে জুলাই, ২০১৮। মাসের বাকি গড়পড়তা বাকি রবিবার গুলোর মতোই আর একটা রবিবার। সকাল থেকে আকাশের দিকে তাকিয়ে বৃষ্টির পূর্বাভাস করতে করতে বাজার যাওয়া, তারপর টুক করে রোদের দেখা পাওয়ার সাথে সাথেই বিগত এক সপ্তাহ ধরে শুকতে চাওয়ার বাসনা নিয়ে ঝুলতে থাকা জামা কাপড় গুলোকে ছাদে মেলতে যাওয়া। মিনিট কয়েক পরেই আবার সেগুলো তুলতে যাওয়া; তারপর ভাত মাংস খেয়ে দুপুরের ঘুম, আর একটু হেলাফেলা করে জমানো বিকালটুকু খরচা করে পরের দিন সকালে উঠে অফিসের বাস ধরার জন্যে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে দিতেই জাগার কোটা শেষ। হঠাত মনে হতে পারে হঠাত আজকের দিনটাকে নিয়েই পড়েছি কেন; কারন দিনটা ২৯শে জুলাই।


গড়িয়াহাট আর ঈশিতা





                গড়িয়াহাটের মোড় মাথাটার এখন খুব শোচনীয় অবস্থা। বাইরের তাপমাত্রা এখন নয় নয় করে ৩০ তো আছেই, তার সাথে আছে ছিচ কাঁদুনে মার্কা বৃষ্টি। মানে সময় নেই অসময় নেই ঝাঁপি খুলে বসলেই হলো। বেশিক্ষন না, ওই মিনিট দশেক হুড় হুড় করে বৃষ্টি হবে, গরমটা আরো বাড়িয়ে দেবে আর সাথে কাদা প্যাচ প্যাচ। মানে এক কথায় প্রকাশ করতে দিলে বিরক্তিকর বললে ফুল মার্ক্স। একে গরম তার সাথে দুপুরের মধ্যে ওই গড়িয়াহাট মোড়ের মাথায় এসে জুটলে আর রক্ষে নেই। যদি কোনও কারনে মনে হয় আপনি মধ্যে প্রাচ্যে বেড়াতে এসেছেন তাহলে একদমই ভুল বলা যাবে না আপনাকে। বাইরের থেকে এই অঞ্চলটা, মানে ওই ধরুন বিজন সেতুর মুখ থেকে এদিকে বাসন্তি দেবী কলেজ, কি আরো একটু টেনেই দিলাম, ট্রাই-অ্যাঙ্গুলার পার্ক অবধি তাপমাত্রা বাইরের থেকে অন্ততপক্ষে ৩-৪ ডিগ্রী বেশি। যেমন ভিড় তেমন গরম। মানে বাস থেকে যদি  ট্রাই-অ্যাঙ্গুলার পার্কে নেমে পড়েন তাহলে বেশি কসরত করতে হবে না। মানুষজন আপনাকে ঠেলে ঠেলেই পৌঁছে দেবে গড়িয়াহাটার মোড়ে। রঙবেরঙের প্লাস্টিকের আড়ালে রকমারী, মনোহারি জিনিসের পসরা সাজিয়ে নানা সুরে ডাকছে গড়িয়াহাট। ফুটপাথ থেকে দোকান সবেতেই কেমন যেন অভিনবত্বের ছাপ। দু দন্ড যে একটু উপভোগ করবে লোকজন তারও উপায় নেই। কনুইয়ের গুঁতোয় তখন আপনি সরে গেছেন পাশের দোকানের কাছে।মানে এক কথায় যা তা।


Friday, 27 March 2020

কোয়ারেন্টাইন




- কি রে কেমন আছিস? বাইরে টাইরে যাচ্ছিস নাকি? 
- বাবাহ, কি ব্যাপার। হঠাৎ আমার খোঁজ!!
- না মানে ওই আর কি। ঘরে বসে... 
- তা বলুন কেমন আছেন? বাইরে বেরোচ্ছেন? 
- বাইরে! বলিস কি রে? মামা ঘুরছে, হাত গরম করবে বলে রেডি। 
- হা হা হা। সে বটে। একদম বাইরে বেরোবেন না। 
- হ্যাঁ৷ কিন্তু এভাবে ঘরে থেকে তো হাত পায়ে ড্যাম্প ধরে যাবে!
- যাক, সরষের তেল তো পাওয়া যায়,  বাকি বুঝে নেব। 
- বুঝে নিবি মানে? 
- স্যার, ইউক্লিড বোঝেন, পিথাগোরাস বোঝেন আর এটুকু বোঝেন না! 
- এই ওগুলো তো বোঝা যায়, কথার জাল যে বড় জটিল। ইতিহাস সাক্ষী আছে। বল না...
- ঘরে সরষের তেল আছে? 
- হ্যাঁ সে তো আছে। 
- আসি তাহলে? 
- এই না একদম বেরোস না। পুলিশ...
- লম্ব সই, অতিভূজ সই আর এটুকু সইতে পারবো না... 



নশ্বর

আমি জানি নশ্বর আমি; একটা একটা দিন ফুরায় আর আমি গুনি; এই বুঝি বাজল সাইরেন; শরীরের কারখানায় যখন ধীরে ধীরে কর্মবিরতি আসতে থাকে হঠাৎ করেই একদিন ...