বই নিয়ে পড়াটা সেই কোন ছোটবেলার অভ্যাস। একটু সময় যেই পেয়েছি অমনি গল্পের বই
খুলে বসে গেছি। আসল সময়ে না পড়ে সেই পুরনো বিজ্ঞান ইতিহাস ভূগোল বই ঘাঁটার ভেতর
কেমন একটা আলাদা মজা অনুভব করতাম। তা মগজের একটু পরিনতি আসতে বুঝলাম জীবের ধর্মই
সামনে এগোনো, পিছনে তাকানো না। এখন তাই এসব
কমিয়ে দিয়েছি। একদমই কিছু করার না থাকলে তখন এসব করি আর কি। তো সেদিন জানলা দিয়ে
হাঁ করে বাইরে তাকিয়ে আছি, কি দেখছি সেটাও জানি
না; কিন্তু তাকিয়ে আছি। ওদিকে এক
বাটি ডাল উনুনে ফুটে ফুটে আধ বাটির নিচে নেমে এসেছে। কিছুক্ষন বাদে হুঁশ আসতে
অনুভব করলাম আমি সূর্যগ্রহণ নিয়ে ভাবা শুরু করেছিলাম। ভাবতে ভাবতে কখন যে চিন্তা
ভাবনা গুলো সূর্যের তাপে বাষ্প হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। ডালটা নামিয়ে এসে চেয়ারে
বসে ভাবতে শুরু করলাম আসল ভাবনার শুরুটা কোথায় ছিল।
বিজ্ঞানের বই তে পড়েছিলাম সূর্যগ্রহণের
কথা। চাঁদ নাকি ওরম কৌটোর মতো চেহারা নিয়ে রাঘব বোয়াল সূর্যকে ঢেকে দেবে। মানে
খালি ভাব, এরম চেস্টা কি আদৌ পূরণ হবে? তবুও প্রকৃতির নিয়ম,
কি করবে
আর, না পারলে গিলতে না পারলে
উগরাতে। আশপাশ দিয়ে সূর্য সেই মুখ বার করেই দিল আর তৈরি হল ডায়মন্ড রিং। ছোটবেলায়
বাবার মুখে শুনেছিলাম এটা দেখা নাকি জীবনের একটা বিশাল অ্যাচিভমেন্টের মত। তাই
জীবনে প্রথম যখন সূর্যগ্রহন দেখলাম তখন খুব ইচ্ছা ছিল ওই ডায়মন্ড রিং দেখবো।
কিন্তু তখন বুঝিনি ওই কথাটার পিছনে শর্তাবলী প্রযোজ্য ছিল। এটা নাকি সব জায়গার
থেকে দেখা যায় না, কিছু জায়গা থেকেই
নাকি দেখা যায়। নিজেকে হতভাগ্য ছাড়া আর অন্য কিছু ভাবার অবকাশ হয়নি তার পর থেকে।
সেই ভাবনা এখনও চলছে সেই ভাবেই৷
এতো বড় লিখে ফেলেছি কিন্তু
আসল লেখা থেকে এখনো মাইল খানেক দূরে। কিন্তু আর সময় খরচা না করে আসতে আসতে লাইনে
আসি। কথাটা হল লেখাটা কেন? আমরা বাংলা মাধ্যমে
পড়ে আসা ভাত রুটি খাওয়া ছেলে মেয়েরা আজকের দিনেও লেখা পরীক্ষায় বেশি
স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। সেই জন্যেই এই লেখার খাতা। বলতে গিয়ে কিছু ভুলে যাওয়ার থেকে
আস্তে আস্তে লিখে সবটা বলাটাই বোধহয় সহজ মনে হয়। এবার প্রশ্ন আসবেই যে কি এমন
জিনিস বলবো যে কিছু বাদ গেলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে; কিন্তু আদতে ব্যাপারটা সেরমই। কিছু একটা বাদ গেলেই মানেটা পরিষ্কার হবেই না, হতভাগ্যের দরুন কতো খারাপ দিকেই না যেতে পারে৷ তাই ওসব
রিস্কে গিয়ে কি লাভ?
না অনেক কথার খেলা হলো এবার
বলেই ফেলি। ওয়াটস্যাপ, ফেসবুক যে যুগে আস্তে
আস্তে পিছিয়ে পড়ছে সেই খানে চিঠি লিখে কাউকে প্রেম নিবেদন রীতিমত নাক সিঁটকে মুখ
বাঁকানোর মতো অবস্থা তৈরী করলে আমি অন্তত অবাক হবো না। কিছুটা মেনেও নেব কারণ এটা
হয়তো এগিয়ে চলারই মানে। কিন্তু ছাড়বো ছাড়বো করেও এটাকে ছেড়ে উঠতে পারিনি এতো
দিনেও। আজও কিছু গোপন কথা বলতে গেলে ঠোঁটের আগে কলমটাই এগিয়ে আসে। এতোক্ষনে হয়তো
বুঝে গেছিস কি বলতে চাই আমি, আর পরিণতি হিসাবে
দুটোর মধ্যে একটা হয়ত এতোক্ষনে সামনে এসেই গেছে। এক হয়তো রেগে গিয়ে বা বিরক্ত হয়ে
লেখা পড়াই থামিয়ে দিয়েছিস আর হয়তো অবাক হয়ে আর কৌতুহলে হয়তো বাকিটা পড়ছিস আর অল্প
লজ্জাও পাচ্ছিস। ভাবছিস পাগলটা এরম কি সব করছে; এই সময়ের সাথে দৌড়ে চলার সময়ে এরকম লেখালিখিকেই বা করে। কিন্তু কি আর করবি বল, এটাকেও নিজের দুর্ভাগ্য বলে ভেবে নিতে পারিস।
এরম দাবি আমি কখনই করবো না
যে আমি একদম পার্ফেক্ট, আমার মতো ভালো কেউ হয়
না, অমুক তমুক; এসব মিথ্যে কথার যুগ থেকে বেরিয়ে আসার মতো বোধ হয়তো হয়ে
গেছে আমার। কিন্তু যেটা বলতে চাই সেটা হলো তোর খেয়াল রাখার চেষ্টা করব যতদূর
সম্ভব। আমি জানি অনেক প্রশ্ন জমা হয়েছে তো,
আমি
আস্তে আস্তে উত্তর দিচ্ছি। প্রথমেই হয়তো মনে হচ্ছে কি করে হবে ব্যাপারটা, আমি আছি এতদূরে,
দেখা
সাক্ষাৎ হবে না এই সব। সাথে এটাও মনে হচ্ছে কি করে পথ হাঁটবো আমরা একসাথে? আবার এটা ভেবেও হয়তো আশঙ্কা হচ্ছে এর ভবিষ্যতটা কি? তাই তো? আমি এর উত্তর দিচ্ছি। প্রযুক্তির যুগে দেখা সাক্ষাৎ কি আদৌ
কোন বাধার কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে? একবার নিজেকে প্রশ্ন
করে দেখলেই হয়তো উত্তর পেয়ে যাবি। সম্পর্কের শুরুটাই যখন এত দূরে সেখানে হয়তো অনেক
যদি কিন্তু আসতে পারে, কিন্তু সব ঝড় ঝাপটার
পরে যখন রোদটা উঠবে সেটাকে উপভোগ করার জন্যে হয়তো আমি আর তুইই থাকবো, আর কোনও বাধা নিষেধ থাকবে না। আর তোর পাশে আমি সব সময় ছিলাম
আছি আর থাকবোও, শুধু সাড়ে চার ঘন্টা পেছিয়ে।
এটা কি চলবে… এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো আমার কাছেও নেই, কারনটাও হয়তো তোর কাছে অজানা না, তাই হয়তো মিথ্যে মন ভোলানো প্রতিশ্রুতি দেওয়াটা কোনভাবেই
সমর্থন করতে পারবো না। তবে এটুকু বিশ্বাস রাখি, যদি পাশে থাকিস তাহলে হয়তো অনেক বাধাই আস্তে আস্তে পেরিয়ে যাবো।
আশ্বস্ত হতে পারলি? হয়তো বা না, হয়তো বা হ্যাঁ। সময়
বয়ে যাবে নিজের মতো, হয়তো সেই সময়ে আমাদের
কোনো দাগও হয়তো রেখে যেতে পারবো না। কিন্তু নিজের কাছে তো একটা মাইল ফলক থেকে
যাবে। আমি আফশোস করতে ভালোবাসি না। আজ হয়তো আছি, কাল কোথায় থাকবো জানি না, তাই তার আগে কোনো
আফশোস যাতে না থাকে সেই ভেবেই একথা বলা। উত্তর কি আসবে সেটা তো জানি না, তবে এই উত্তরের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সমীকরণ বদলে না যায় এটাই
চাওয়ার থাকবে। সূর্যগ্রহনের পরে কিন্তু চাঁদ আর সূর্যের মধ্যে সব হিসাব আর আগের
মতো হয়ে যায়। আর সবুজ বাতি পেলে হয়তো সেই ডায়মন্ড রিংটা দেখা হয়ে যাবে, যার জন্যে এতো বছর অপেক্ষা করছি। উত্তরটা না হয় কুরিয়ার না
করলেও হবে।
আগে বলেছিলাম না চুলটা কেন বেঁধে রাখিস খোলা রাখবি বেশি ভালো লাগবে, ওই কথাটা ফিরিয়ে নিচ্ছি আমি। চুল বাঁধলেও ঠিক অতোটাই সুন্দর
লাগে…
Eta darun
ReplyDelete