এখন আমার
এসি ছাড়া ঘুম হয় না। অফিসে সারাদিন এসিতে থাকার পর অপেক্ষায় থাকি কখন বাড়ি ফিরে এসিটা
একটু চালাব। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথটাও এসি বাসেই কেটে যায়, বিরক্তির জায়গা শুধু ওই
বাসস্টপ থেকে বাড়ির দোরগোড়া অবধি পথটা। কলকাতার প্যাচ প্যাচে গরম নিয়ে হাজার অভিযোগ
জমা হয় ওই পাঁচ-দশ মিনিটের হাঁটা পথটায়। এক নিশ্বাসে উগরে দি বাড়ি ঢুকেই। স্বভাবের
দোষে এখন আর নন এসি বাসে যাতায়াত করতেও পারি না। সেদিন বাড়ি ফিরে নিত্যদিনের অভ্যেস
মতোই ক্ষোভ উগরে দেওয়ার পরে, স্নান সেরে যখন এসিতে ঢুকলাম, মনে হল যেন দুনিয়ার সকল
সুখ ওখানেই আছে। জলদি খেয়ে দেয়ে নিয়ে বিছানায় শুধু গড়িয়েছি মিনিট দশ পনেরো হলো, অমনি
টুক করে কারেন্ট অফ। মনে হল যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। উগরে দেওয়া ক্ষোভ যেন নতুন
করে জন্ম নিল আবার, মুখ দিয়ে স্বতোতসারিত ভাবে বেরিয়ে এলো, “ধুর শালা, এখনই যেতে হল…!!
এবার আমি ঘুমাবো কি করে?” মানুষ এভাবেই অভ্যাসের দাস হয়ে যায়। সেদিন আর ঘুম হয়নি, রাত
তিনটে অবধি জেগে থেকে কারেন্ট আসার অপেক্ষা করেছি। কিন্তু কারেন্ট না আসায় আর ঘুম হয়নি।
কিন্তু ওই ছেলেটা এভাবেই ঘুমিয়েছে দিনের পর দিন, কেউ জানতেও চায় নি তার কষ্টের কথা।
খাওয়া
দাওয়া নিয়ে আমার নাক উঁচু তেমন ছিল না কিন্তু দুধ খাওয়া নিয়ে উদয়াস্ত এক চোট পর্ব চলত।
আমিও খাব না, আর বাড়ির লোকেও ছাড়বে না। অর্ধেক দিন লুকিয়ে লুকিয়ে জানলা দিয়ে কত যে
দুধ ফেলেছি তার হিসাব দিলে কয়েক হাজার টাকা হয়ে যাবে।বাবা মা বার বার জানতে চেয়েছে আমি দুধ খেয়েছি কিনা কিন্তু কেউ কখনো জানতে ছায়নি 'ওই' ছেলেটা কি খেয়েছে।