Wednesday, 25 April 2018

Dance of Destiny






While walking on the ridge
I often look down,
I look down to the past I left behind;
I look down to the mistakes I made
I want to in the fear, conquer the wind
I want to win.

Monday, 2 April 2018

হালের হালখাতা




তুলনাটা কেমন যেন আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গেছে। ছোট থেকে বড় সব কিছুতেই কেমন তুলনা। এটা যে শুধু হালের আমদানি এরম ভাবাটা খুব ভুল। এসব আগেও ছিল, এখনো আছে। শুধু পরিসরটা বদলে গেছে। আগে পাড়ার মীনা কাকিমার মেয়ে হয়েছে আর আমার কাকিমার ছেলে থেকে হাল আমলে আমার ফেসবুকের লাস্ট ডিপিটায় সৌরভের ডিপির থেকে বেশি লাইক পড়েছে পর্যন্ত সব কিছুতেই মুড়ি চানাচুরের মত তুলনা রয়ে গেছে। তো এসব লিখছি মানে এরম ভাবার কোন কারন নেই যে আমি তুলনা করি না, আমিও করি। আমায় ওমন সাধু পুরুষ ভাবার বিশেষ অবকাশ আমি দি না।

পাহাড়ের ডাকে... ( দ্বিতীয় পর্ব )

ট্রেনের বিপত্তি


ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার পর আর বিশেষ বিপত্তি হয় নি। সবাই সবার মত জায়গা বুঝে নিয়ে চুপচাপ ঘুমের ব্যবস্থা করছে। আমি চিরকালই আপার, তাই বাই ডিফল্ট সেদিকেই চলে গেছি। এবার আবার সাইড আপার, একেবারে সোনায় সোহাগা। রেলের দেওয়া কম্বলটা সুন্দর করে পেতে তার ওপর চাদর টাকে টানটান করে নিয়ে মাথার দোরগোড়ায় ক্যামেরার ব্যাগটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে নিয়ে, সেই কি ঘুম। সারাদিনের খাটা খাটুনির পর এক পরম তৃপ্তির ঘুম। এ ব্যাপারে বলে রাখা ভালো ট্রেনের দুলুনিতে আমার ঘুমের একদম কোন প্রবলেম নেই, বরং ওই দুলুনিতে আরো জমে যায় ঘুমটা। তাই বুঝতেই পারিনি কখন সকাল হয়ে গেছে।

সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ একটা আলগা টোকা অনুভব করলাম। আধ খোলা চোখে দেখি এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত অবধি দাঁত বের করে সোহম হাসছে। কিছু ভুলভাল দাবি হবে ভেবেই আমি আবার যেই চোখ বুজতে যাচ্ছি অমনি ব্যাটা বলে, "আর কত ঘুমোবি? এবার ওঠ।" গালাগালটা মুখ ফস্কে বেরিয়েই আসছিলো কিন্তু কোন মতে সামলে নিয়ে বুঝলাম ইগনোর করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। চোখ বুজে আবার শুয়ে পড়লাম।  আধ ঘন্টা পর আবার ডাক। এবার সেই অম্লান বদনের নির্মল হাসি। সাথে একটা অমানবিক দাবি, "ভাই খুব ক্ষিদে পাচ্ছে।" এই প্রশ্নের উত্তর ছিল না আমার কাছে। তবুও একটা পজিটিভ টোনে উত্তর দিয়ে বললাম," হারামজাদা এই তো খেলি, এর মধ্যেই... একটু ওয়েট করে যা। আমি উঠলে খাবি।" এটা বলেই আবার যেই না একটু পাশ ফিরেছি অমনি ডাক আবার। বুঝলাম ভবি ভোলার নয়, তাই অগত্যা ঘুমের দফা রফা করে আমি উঠে বসলাম। সঙ্গে সঙ্গে হাসিটা আরো চওড়া হয়ে গেল। মিনিট খানেকও গেলো না মুখের গোড়ায় চা এসে গেল। বুঝলাম বেকার বেকার ক্ষুধার্ত বাঘটাকে আটকাতে চাইছিলাম। সোহম চা খেলো না, বললো বাথরুমের অবস্থা তেমন ভালো না, তাই চাপ হয়ে যাবে চা খেলে। পরিবর্তে দুটো শিঙাড়া আর দুটো প্যাকেট সস(আমার ভাগেরটাও ও খেয়েছে)। ভাবলাম এই খাওয়ার তারসে কিছুক্ষন বুঝি আরামে থাকা যাবে। কিন্তু না, খুব মেরেকেটে এক ঘন্টা যাওয়ার পরেই আবার পেটে টান। এবারেও উদ্ধার কার্যে শিঙাড়া, বাকিটা চর্বিতচর্বণ। ইতিমধ্যে পাশের কামরা থেকে সৌরভ এসে হাজির। জিনিসপত্র গুলো খালি থাকবে ভেবে আমি চলে গেলাম ওই কামরায়। বেশ ভালো জায়গা পেয়ে সকালের বাকি ঘুমটাও সেরে নিলাম।

প্রায় বেশ কিছুক্ষন পর হঠাত করে একটা টোকা অনুভব করলাম। আধ ঘুমে চোখ খুলে দেখি সৌরভ একটা ফয়েল এনে বলছে জল খাবারটা খেয়ে নিতে। আমিও দিব্যি খেয়ে নিয়ে তার পর নিজের জায়গায় ফিরে এসে দেখি সোহম তখন মহানন্দে সস খাচ্ছে। এত সস খেয়েছে ও যে পেটের থেকে প্রায় এক কেজি টমেটো বেরিয়ে যাবে। সে যাই হোক জায়গায় ফিরেই একটা ভালো খবর পেলাম, আমায় দেখেই মহানন্দে সোহম বলে উঠল, "ভাই ট্রেন একদম অন টাইম।" সততই খুশির খবর, তবে কেমন যেন খটকা লাগলো। যোধপুর এক্সপ্রেসের ব্যাপারে যা শুনেছিলাম সেটার সাথে মেলাতে পারছিলাম না। মনে মনে সব শালাকে এক হাত নেবার কথা ভেবে রাখছি, ঠিক তখনই মুঘলসরাই স্টেশনে ট্রেন ঢুকলো। সময় ১১টা, টাইমের ৫ মিনিট আগে। মনটা খুশি খুশি হয়ে উঠল, মেহেবুবাকে দেখতে কার না মন চায়...

খুশি থাকলো না বেশিক্ষন। মীরজপুর থেকে ট্রাভেল খানা ডট কমের লোভনীয় গুগুল ইমেজ দেওয়া ডাল ফ্রাই আর মিক্স ভেজ অর্ডার করা ছিল। কথা ছিল জায়গা এলেই আমাদের সিটে ডেলিভারি দেবে। কিন্তু কোথায় কি, শালা স্টেশানও ছেড়ে গেল আর আমাদের পেটটাও খালি রয়ে গেল। কাজের কাজ হল না। তড়িঘড়ি কাজ চালাতে আবার অন্য একটা ওয়েব সাইট থেকে মিক্স ভেজ অর্ডার করা হল। এবার বলা হল এলাহাবাদ স্টেশান থেকেই খাবার উঠবে। কিন্তু ভাগ্যের মার, কে বাঁচায় আর। এলাহাবাদের সঙ্গমে গঙ্গা যমুনার মিলন হলেও আমাদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়লো না। আবার ধোঁকা, স্টেশান চলে গেল, কিন্তু না... এবারেও হল না। উপায়ন্তর না দেখে বিরক্তি চরম সীমায় পৌঁছানোর আগেই বাসি লুচি আর আধা গন্ধ লাগা আলুর তরকারি দিয়েই দুপুরের খাবারটা সারতে হল। ইতিমধ্যে নিজের জায়গায় ফিরে গেছে যোধপুর এক্সপ্রেস। টাইমের থেকে বেশ অনেক খানি পিছনে, এলাহাবাদ ঢুকতে প্রায় দু ঘন্টা মত লেট।বুঝলাম কপালে দু:খ আসছে।

কথা ছিল চারটে নাগাদ কানপুর পৌছাবে, কিন্তু চারটের সময় ট্রেন কোন এক ভাগাড়ের পাশে উদবাস্তুর মত দাঁড়িয়ে আছে। জিওর দৌলতে কোন মতে গুগুল ম্যাপটা কানেক্ট করে দেখি কানপুর কোথায় কি! মাইলের পর মাইলের দূরে, বুঝেই গেলাম কানপুর আসতে মিনিমাম সাতটা, আটটা। ফ্রাস্টেশান যাতে না বাড়ে তাই সরাসরি একটা চায়ের অর্ডার দিয়ে দিলাম। বাঙ্গালির সোজা সলিউশান যখন কিছু ভাল যাচ্ছে না, এক কাপ চা খাও। আমিও তাই করলাম।ওদিকে সোহমের সে সবের হুঁশ নেই, দিব্যি নাক ডাকিয়ে ঘুমাচ্ছে। কি আর করি তাই আমি আর সৌরভ বসে গল্প জুড়লাম। আগের দিন ইনসেন্টিভ আসায় এটাই এখন হট টপিক। তাই সেই সব নিয়েই কথায় কথায় কিছুটা টাইম কাটানো গেল। এদিকে এটা যোধপুর এক্সপ্রেস না যোধপুর কার্ট সেটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল। গতি মন্থরতার প্রায় সমস্ত লিমিট ছাড়িয়ে গেছে এই ট্রেন।

প্রায় অনেকক্ষন গল্প করার পর ওই সাড়ে ছটা, সাতটা নাগাদ সোহমের সিটে গিয়ে দেখি ছেলে বসে বসে চিপস খাচ্ছে আর পাশে খালি দই এর কৌটো রাখা। আমায় দেখেই এক গাল হেসে বলছে," কি করব ভাই, খুব খিদে পাচ্ছিল।" আমি যে কি উত্তর দেব বুঝে পেলাম না।  তখনও কানপুর আসেনি, তাই ফ্রাস্ট্রেশানটা যে চরম সীমায় গেছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। তাই সোহমের অনবরত খাওয়াটাকেও দোষ দিতেও পারছি না।আমিও চরম ভাবে হতাশ। শেষমেষ রাত সাতটা তিরিশ নাগাদ কানপুরের দর্শন পাওয়া গেল। প্রায় সাড়ে তিন চার ঘন্টার ঘাটতি। খুশি হওয়ার মত কোন বিষয় না হলেও একমাত্র সিলভার লাইনিং হল মেহেবুবার আর একটু কাছে এলাম।

কাছে যাওয়ার এই অনুভুতিটা বেশ উপভোগ্য। কিন্তু সেটার একটা লিমিটেশান থাকে। আমার আর তর সইছিলো না। এদিকে সিডিউল টাইম অনুযায়ী রাত আটটায় আগ্রা ফোর্ট স্টেশানে নামার কথা। নড়ে নড়ে ট্রেন এগারোটা নাগাদ তুন্ডলাতে হাজিরা দিল। মন বলছে আর একটু খানি, খুশি প্রায় দ্বিগুন হয়ে গেছে। কিন্তু না, আবার বিপত্তি। তুন্ডলা থেকে হিসাব কষে ঠিক ২০-২৫ মিনিট লাগার কথা, কিন্তু সিংগেল লাইন হওয়ার জন্যে সিগনাল না পেয়ে প্রায় ২০-২৫ মিনিট আটকে আগ্রা ফোর্ট স্টেশানের বাইরে। মানে দেখতে পাচ্ছি স্টেশানটা, কিন্তু নেমে যেতে পারছি না। ইতিমধ্যে আর তর সইতে না পেরে ট্রেনের ক্যান্টিনের এগ বিরিয়ানিই মহানন্দে সাঁটিয়ে দিয়েছি। এই বিরিয়ানি শব্দটা বাঙালিদের কাছে খুব আদরের। হলুদ রঙের ভাতের মধ্যে ডিম ফেলে দিয়ে এগ বিরিয়ানির দাবি দিলে মেনে নেব নাকি? এরা বিরিয়ানির নামে যে প্রহসনটা চালাচ্ছে সেটা নিয়ে অবিলম্বে আমাদের বাঙালি ইউনিয়নের একটা মানহানির মামলা করা উচিত।শালা বলে সাদা ভাতে ডিমের ঝোল ফেলে বলে নাকি এগ বিরিয়ানি!!! কিন্তু খিদের মুখে নিরুপায় হয়েই গোগ্রাসে গিলতে বাধ্য হয়েছি, না হলে ও পথ আর মাড়াই নাকি!!!   তো যাই হোক, অনেক টাল বাহানার পর প্রায় পৌনে বারোটা নাগাদ পা রাখলাম আগ্রা স্টেশানে। অনেক উপেক্ষা, অনেক বিপত্তির পর আমি এলাম আমার স্বপ্নের শহরে, আমার মেহেবুবার কাছে। সময়টা যেন আর কাটছে  না....

নশ্বর

আমি জানি নশ্বর আমি; একটা একটা দিন ফুরায় আর আমি গুনি; এই বুঝি বাজল সাইরেন; শরীরের কারখানায় যখন ধীরে ধীরে কর্মবিরতি আসতে থাকে হঠাৎ করেই একদিন ...