Tuesday, 28 March 2017

কিন্তু সেদিন বৃষ্টি আসেনি


তোর মনে পড়ে
সেই যেদিন আমরা প্রথম একসাথে হেঁটেছিলাম,
একলা পড়ে থাকা ওই গাংপাড়টা ধরে;
ঘাটে নামার সিঁড়ির পাসে জমে থাকা ওই স্তূপাকার পচা ফুলগুলো
ড্যাবড্যাব করে সন্দেহের চোখে তাকিয়েছিল আমাদের দিকে,
আমাদের বসতে দেয়নি ওই ঘাটে;
আমি তখন একটু হেসেছিলাম,পাত্তা দিইনি ওই চোখরাঙ্গানিটাকে,
শুধু আলতো জোরে হাতটাকে কাছে টেনে নিয়েছিলাম যাতে ফস্কে না যায়;
তুই সেদিন বুঝেছিলি,
তবুও না বোঝার মুখোসে মুখটাকে কেন জানিনা ঢেকেছিলি,
একবারও খেয়াল করিসনি তোর ওই চোখদুটো আমি চিনি।
হয়তো বুঝে বা না বুঝেই আমরা খুঁজেছি উত্তাপ,
আমিও হাতটা ছাড়িনি আর তুই ও ছাড়াতে চাস্‌নি;
সেদিন আমরা বেরিয়েছিলাম একটু ভিজব বলে,
কিন্তু সেদিন বৃষ্টি আসেনি…
আসেনি সেই বিশ্বাস যা আমায় নগ্ন করবে তোর সামনে , বলাবে সত্যি কথা। 
সেদিন যখন হেঁটে গিয়ে ওই ঝালমুড়িওয়ালার কাছে দাঁড়ালাম
ঠোঙ্গার ওই ফাঁকটা দিয়েও আমি পড়েছিলাম তোর চোখ দুটো
ধরা পড়েগেছিলি সেদিন আমার কাছে;
আমিও কেমন বুঝেও সেদিন বলতে পারিনি তোকে,
হয়তো বৃষ্টির অপেক্ষায় কাটিয়েছিলাম প্রহর;
কিন্তু সেদিন বৃষ্টি আসেনি…
আজও যখন বাড়ি ফেরার পথে একা একা শহরের রাস্তায় ভিজি
তখন আমি ফিরে যাই ওই গাংপাড়ের কাছে
আর মনে হয় চিৎকার করে বলি আমি তোকেই ভালবাসি।
সেই পচা ফুলগুলো আর চোখ রাঙ্গানি দেয়না;
অপেক্ষার অন্ত নেই আমার;
এখনও মনে হয় আমি তো সেই তোকেই চেয়েছিলাম যে বলবে,
“ ধুর পাগলা, আমি আবার অন্য কারও নাকি? আমি তো তোরই,”,
সেই তোকেই চেয়েছিলাম
যে আমার মাথার পিছে আলতো চাঁটি মেরে একটা চুমু খাবে,
যে আমায় বলবে,” ছেড়ে যাস না প্লিস,আমি তোকেই ভালবাসি।“
আমি কিন্তু এখনও সেই তোকেই খুঁজি,
বৃষ্টি ভেজা শহরের অচেনা মোড়ে,পথে ;
আর বারে বারে শুধু ছুটে যাই সেই গাংপাড়ের ঘাটে,
হা হুতাশ করিনা আমি,শুধু একটাই আফসোস রয়ে যায়
“ইসস্‌ , যদি সেদিন বৃষ্টি আসতো...”

Wednesday, 15 March 2017

তবে আরও একবার স্পর্শ করে

স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হতে চেয়ে আজ ও ঘুরে ঘুরে ফিরি ,
মিথ্যে কিছু আশ্বাস আর প্রতিশ্রুতির প্রলোভনে
স্বপ্ন চুরির উদ্দামতায়
যখন হারিয়েছি ফেলে আসা সব সংকল্প;
সময়ের কাছে বাড়িয়েছি ঋণ,
চিৎকার করে বাহুবলে ছিনিয়ে নিতে চেয়েছি
শতাব্দী প্রাচীন ওই ভালোবাসার স্তোত্র গুলোকে
হাত পা ছুঁড়ে স্থাপন করতে চেয়েছি নিজের ভালোবাসা,
আমি পারিনি,পারিনি আজ ভালবাসতে;
চেয়েছি আমি,কিন্তু উত্তর মেলেনি আজও।
তাই আজ খালি হাতে এসেছি তোর দ্বারে,
জমিয়ে রাখা সব ভালোবাসা গুলো কে উজাড় করে
নিঃশেষ হয়েছি আজ তোর কাছে,
ভালবেসেছি সব দিয়ে, আশ্বাসের আশ্বাস না দিয়ে;
আমি জানি তুই ফেরাবি না আমায়,
ভালবাসিস তুই, তোর ওই লুকিয়ে রাখা অসহায়তা দিয়ে,
আমি জানি তুই সাজাবি আমায়,
সাজাবি ওই তুলে রাখা আবির রঙের পাঞ্জাবিটা দিয়ে,
তুই তো বলিস ওটায় আমায় ভালো লাগে;
বল না সাজাবি না আমায়?
তোর ওই স্বপ্ন মাখা ঐক্যতানে আজ ও আমি খুঁজে চলেছি
আমার জীবনের বাস্তবতা,
বল না, দিবি আমায় তোর কাছে আসতে?
দিবি না আমায় তোকে ভালবাসতে?
তোর ওই সাতরঙা ভালোবাসায় আবার নাহয়
নতুন করে জন্ম নেব আমি;
তবে তো আমি আসতে পারি কাছে?
একবার এই চোখের দিকে চেয়ে দেখ্‌
হাজার হাজার স্বপ্ন আজ ও
তোর কথায়,তোর ইশারায় স্বপ্নের জাল বোনে,
তাদেরকে কি ভাসিয়ে দিতে পারবি  তুই
ওই অব্যক্ত চোখের জলে?
আমি নিশ্চিত তুই পারবি না;
তুই আমায় ভালবাসিস, তোর ইশারা গুলো আমায় আজ চেনে;
চেনে ওই স্পর্শ, চেনে এই উত্তাপ,
তবে আরও একবার স্পর্শ করে বিবশ কর না আমায়…

Thursday, 9 March 2017

লিখছি যখন

লিখছি  যখন, আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি এলো
সঙ্গে এলো আঁধার ভরা কালো;
কেমন করে জানি কেটে গেলো সব যোগ,
উথাল পাথাল নদী, আর  চিন্তার সাগরে  বাঁধলো গোলযোগ ;
আমি থমকে গেলাম,
শরীর নিয়ে ক্লান্ত হয়ে আটকে গেলাম ওই একলা বন্দরে,
দু হাত ভরে প্রানপনে আটকে দিয়ে নোঙর,
ভাসতে লাগলাম ওই ঢেউয়ের অন্দরে;
মুখে রেখে চিৎকার, উদ্বাহু আর্তনাদ  যদি কেউ বাঁচায় ;
নিজের নির্বুদ্ধিতায় দিশেহারা হয়ে
হারিয়ে এসেছি নাচঘরের সেই ঘুঙুর;
এখন কে শোনাবে আমায়
মাঝরাতের সেই গল্পবলা গানের ধুন?
খানিক অকপট,খানিক ক্লান্তি খানিকটা নিদারুন।।

এখনও লিখছি আমি, বৃষ্টিও থামেনি কথামতো,
পার করার পথ ভুলে, নৌকাটা আজ ঘুরছে ওই মাঝদরিয়ার স্রোতে,
খানিকটা ক্যাবলা, খানিকটা ভ্রান্ত,
অনেকটা এক পেশে ভবিতব্যের হাতে;
মাঝি বুঝি তুই ছিলি? তাই তো এতো টলমল করে তার পদচারন,
অনেকটা সেই অমাবস্যায় চন্দ্রগ্রহণ;
ভালো মন্দের বিচার করিনি তখন
ঝাঁপ দিয়েছিলাম তোকে একলা করে মাঝে,
আবার আমি ফিরে এসেছিলাম ঘুরে,
সাঁতরে হাজার ঢেউ, নৌকাকে আজ সরিয়ে রেখে দূরে
আমি সেদিন গিয়েছিলাম তোকে কাছে রাখার তরে;
তখন নদীর মাঝে আঁধার হয়ে গেছে,
পাড়ে পাড়ে নেমে এসেছে সাঁঝ,
বৃষ্টিটাও ধরে গিয়েছে অনেক;
ওই আকাশ ভরা নিঃসঙ্গের মাঝে আমি লিখছি তখন তোর মুখের ছবি।।

নশ্বর

আমি জানি নশ্বর আমি; একটা একটা দিন ফুরায় আর আমি গুনি; এই বুঝি বাজল সাইরেন; শরীরের কারখানায় যখন ধীরে ধীরে কর্মবিরতি আসতে থাকে হঠাৎ করেই একদিন ...